হত্যা, চাঁদাবাজি, প্রতারণা ও মামলা বাণিজ্যসহ ডজনখানেক মামলার আসামি ও স্বঘোষিত সাংবাদিক সিকদার লিটনকে আবারও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুর শহর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফরিদপুরের সাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জুর হোসেন বুলবুলের পিএস হিসেবে পরিচিত সিকদার লিটন। তার বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।
ফরিদপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মামুনুর রশিদ এবং উপপরিদর্শক (এসআই) আজিজের নেতৃত্বে একটি দল সিকদার লিটনকে গ্রেপ্তার করে। এ বিষয়ে ওসি মামুনুর রশিদ বলেন, “চাঁদাবাজির অভিযোগে কোতোয়ালি থানায় সিকদার লিটনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় তাকে শহর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।”
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৎকালীন এমপির ছত্রছায়ায় সিকদার লিটন নানা ধরনের অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। তার বিরুদ্ধে ঢাকায় ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে একাধিক হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলার অভিযোগ আছে। এছাড়া, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় ভাঙচুর ও নাশকতার অভিযোগে করা বিস্ফোরক ও নাশকতার মামলার এজাহারনামীয় আসামি তিনি।
২০২০ সালে একাধিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে পালিয়ে থাকার সময় র্যাব তাকে ভাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তার করে। দীর্ঘদিন কারাভোগের পর জামিনে বেরিয়ে এসে সে আবারও প্রতারণামূলক মিথ্যা মামলা বাণিজ্য শুরু করে। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে অর্থ উপার্জনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
চলতি বছরের ৫ মে ঢাকার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলায়ও ফরিদপুর থেকে ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল।
দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিক পরিচয়ে সিকদার লিটন প্রতারণা করে আসছে। মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ উপার্জন তার আয়ের প্রধান উৎস বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার বিকাশ অ্যাকাউন্টে তিন মাসে প্রায় ২২.৫০ লাখ টাকার লেনদেন খুঁজে পেয়েছে, যা তার অস্বাভাবিক আর্থিক কার্যক্রমের প্রমাণ দেয়।
পাঁচ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন কারাগারে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া জাবেদ নামের এক যুবকের পরিবারের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না থাকা সত্ত্বেও সিকদার লিটন নিজেকে তার খালাতো ভাই পরিচয় দেয়। এরপর কেরানীগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এই মামলায় আসামি করার ভয় দেখিয়ে তিনি অনেকের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে নিহত জাবেদের ভাই মাইনুদ্দীন ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
মন্তব্য