গাইবান্ধার ফুলছড়িতে দুস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে ভিজিএফ এর চাল বিতরণ করার সময় লুটপাট হয়েছে। আজ বুধবার বিকালে দিকে উপজেলার উদাখালী ইউনিয়ন পরিষদে এ লুটপাটের ঘটনা ঘটে। লুটপাটে বাঁধা দিতে গিয়ে ইউপি সচিব সহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
জানা যায়, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় এবছর উদাখালী ইউনিয়নের ৪ হাজার ৭৮টি দুস্থ ও অসহায় পরিবারের মাঝে জনপ্রতি ১০ কেজি করে বিতরণের জন্য ৪০ দশমিক ৭৮ মেট্রিকটন চাল সরকার বরাদ্দ দেয়। বরাদ্দ অনুযায়ী গত মঙ্গলবার দুস্থদের মাঝে টোকেন বিতরণ করে ইউনিয়ন পরিষদ।
বুধবার সকাল থেকে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত তদারকি কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেনের উপস্থিতিতে উক্ত বরাদ্দকৃত চাল টোকেন অনুযায়ী বিতরণ করতে থাকেন সংশ্লিষ্টরা। বিকালের দিকে চাল বিতরণের শেষ পর্যায়ে কিছু লোকজন বিতরণস্থল উদাখালী ইউপির চালের গুদামের সামনে উত্তেজনার সৃষ্টি করে।
এ সময় উপস্থিত লোকজন তাদের সাথে গুদামে অতর্কিত প্রবেশ করে চালের বস্তা লুট করে এবং লুটপাটে বাঁধা দেওয়ায় ইউপি সচিব নুর আলম সহ বেশ কয়েকজন মারপিটের শিকার হন।
এ বিষয়ে উদাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল আমিন আহমেদ বলেন, ‘চাল বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা চালের টোকেন দাবী করে আসছিলেন। তাদের দাবিকৃত চালের ভাগ না দেওয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরা বুধবার সকাল থেকেই বিতরণস্থলের আশেপাশে এসে লোকজনকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা গুদামে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় আমি সহ দায়িত্বপ্রাপ্ত তদারকি কর্মকর্তা, ইউপি সচিব সহ গ্রামপুলিশরা তাদের বাঁধা প্রদান করি।
এর একপর্যায়ে তারা লোকজন নিয়ে অতর্কিতভাবে জোরপূর্বক গুদামে প্রবেশ করে বিতরণের জন্য রক্ষিত চাল লুটপাট করে। তারা ইউপি সচিব, গ্রামপুলিশ ও বিতরণের কাজে নিয়োজিত কয়েকজনকে মারপিটও করে। তিনি বলেন, লুটপাটের ঘটনার পরপরেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি অবগত করার পর তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এবিষয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।’
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত তদারকি কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘চাল বিতরণের শেষের দিকে আনুমানিক ২০/৩০ বস্তা (প্রতিবস্তা ৩০ কেজি) চাল থাকা অবস্থায় গুদামের দরজার সামনে টোকেনধারী ও টোকেন ছাড়াও কিছু লোকজন ভীড় করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা দরজা ধাক্কা দিয়ে জোরপূর্বক ভিতরে প্রবেশ করে চালের বস্তা লুটপাট করে। আমরা বাঁধা দিয়ে রক্ষা করতে পারি নাই।’
বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জগৎবন্ধু মন্ডল সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি আইনগত প্রক্রিয়ায় যাবে। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট তদারকি কর্মকর্তাকে এবিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলেছি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর লুটকৃত চালের হিসাব পাওয়া যাবে।’
এ দিকে উদাখালী ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপির নেতাকর্মীদের দোষারোপ করায় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ফুলছড়ি উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় তারা ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবী করে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়।
মন্তব্য