বশেমুরবিপ্রবিতে কম্পিউটার চুরির জড়িতদের কঠিন শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন 

  • আশরাফুল আলম, বশেমুরবিপ্রবি:
  • বুধবার, ১৯ আগস্ট ২০২০ ১২:৪২:০০
  • কপি লিঙ্ক

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে কম্পিউটার চুরির সাথে জড়িত সকলের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন পালন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আজ ১৮ আগস্ট (মঙ্গলবার) দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে এ মানববন্ধন পালিত হয়।

মানববন্ধনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে চার ছাত্রলীগ কর্মী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, শেখ তারেক, বাবুল শিকদার বাবু এবং ফাহাদ  সার্জিল বক্তব্য রাখেন।

বক্তব্যে তারা বলেন, “ইতিমধ্যে কম্পিউটার চুরির ঘটনায় মাসরুল ইসলাম পনি শরীফ নামের একজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র একজন শিক্ষার্থীর পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে এত বড় চুরির ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয়। আমরা চাই কম্পিউটার চুরির সাথে জড়িত সকলের নাম যাতে প্রকাশ করা হয় এবং তাদের যেনো বিচারের আওতায় আনা হয়।”

এসময় তারা দাবি করেন রেস্তোরা থেকে কম্পিউটার চুরির ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীকে আটকের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তাও ওই শিক্ষার্থীর সাথে রেস্তোরাতে উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, কম্পিউটার চুরির ঘটনা তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটিতে যদি সন্দেহজনক কেউ থাকে তাকেও যেনো বাদ দেয়া হয়। এসময় তারা এ ঘটনাসহ ইতিপূর্বে ঘটা কম্পিউটার চুরির ঘটনাসমূহের বিচার নিশ্চিতে গোপালগঞ্জ ২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এছাড়া, ছাত্রলীগ কর্মী ফাহাদ সার্জিল জানান, তিনি ১৮ জুলাই বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। এসময় গেটে দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে বাঁধা দেয় এবং জানায় করোনা মহামারীর কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুৃমতি ব্যতিত প্রবেশ নিষেধ। কিন্তু একইসময় তিনি চুরির ঘটনায় গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থী  পনিসহ আরও কয়েকজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে জয়বাংলা চত্বরে দেখতে পান। এ সময় তিনি নিরাপত্তা কর্মীদের নিকট জানতে চান পনি কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছে। উত্তরে নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে জানান পনি  বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করেছে।

এ বিষয়ে ১৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে দায়িত্বপালনকারী নিরাপত্তাকর্মী আবু বকর জানান, “১৮ জুলাই পনি নামের ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে চাইলে আমরা প্রথমে তাকে বাঁধা দেই এবং কর্তৃপক্ষের কারো অনুমতি নিতে বলি। এসময় তিনি এক কর্মকর্তাকে ফোন দেন এবং সেই কর্মকর্তাকে আমাদেরকে বলেন পনি যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাকে যেনো প্রবেশ করতে দেই।”

এদিকে, যেই রেস্তোরা থেকে পনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেই বারবিকিউ রেস্তোরায় কর্মরত মোঃ রেজওয়ান মোল্লাও জানান, যেসময়ে তাদের রেস্তোরা থেকে শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয় সেসময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের অনুমতি আদায় করে দেয়া কর্মকর্তা এবং গ্রেফতারের সময় রেস্টুরেন্টে পনির সাথে উপস্থিত থাকা কর্মকর্তা একই ব্যক্তি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক কম্পিউটার চুরির ঘটনায় গঠিত সাত সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান মোঃ আব্দুল কুদ্দুস মিয়া বলেন, “তদন্ত কমিটি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে এবং  কমিটির কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে উপাচার্যের সাথে আলোচনাসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

উল্লেখ্য, ঈদের ছুটিতে বশেমুরবিপ্রবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে ৪৯ টি কম্পিউটার চুরির ঘটনা ঘটলে পরবর্তীতে ১৩ আগস্ট রাতে রাজধানীর মহাখালী এলাকার ক্রিস্টাল ইন রেস্তোরায় গোপালগঞ্জ ও ঢাকার বানানী থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ৩৪ টি কম্পিউটার উদ্ধার করে এবং ২ জনকে গ্রেফতার করেন। চুরির এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থী সহ ৭জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

মন্তব্য